নিরাপত্তা নিয়ে চরম শঙ্কায় মানুষ; কী করছে পুলিশ, সেনা ও র্যাব
ঢাকার বনশ্রীতে একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে গুলি করে ও চাপাতি দিয়ে কোপানোর ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার প্রেক্ষাপটে সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে নিরাপত্তার প্রশ্নে; তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে সারা দেশে।
একই সঙ্গে আলোচনায় উঠে এসেছে গত কিছুদিনে সংঘটিত বেশ কিছু চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগের পটভূমিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি উঠেছে বিভিন্ন পক্ষ থেকে।
এই দাবিতে রোববার দিবাগত রাতে বিক্ষোভ হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। আজ সোমবার শহীদ মিনারে জমায়েতের পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিমুখে গণপদযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হয়েছে ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ এর ব্যানারে।
পদত্যাগের দাবির মুখে রোববার দিবাগত রাত তিনটার দিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অবসরপ্রাপ্ত) তার বারিধারার বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আজ থেকেই দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির লক্ষণীয় উন্নতি হবে।
ওদিকে পুলিশের আইজি বাহারুল হক রাজশাহীতে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বলেছেন, ছিনতাই প্রতিরোধে তারা একটি বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ।
তিনি জানান, ঢাকা মহানগর পুলিশ, র্যাব ও এন্টি টেরোরিজম ইউনিট আজ থেকেই যৌথ অভিযান করবে। এটি কার্যকর না হলে ভিন্ন পরিকল্পনা নেওয়া হবে।
সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কিত এক বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাও বলেছেন যে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে আজ সন্ধ্যার পর থেকেই কম্বাইন্ড পেট্রোল (যৌথ টহল) শুরু হবে।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মাঠপর্যায়ে পুলিশ ছাড়াও র্যাব ও সেনাবাহিনী মোতায়েন থাকার পরেও কেন পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে?
সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. তৌহিদুল হক বলছেন, সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যে অভিযান চলছে, তার টার্গেট শুধু রাজনৈতিক ডেভিলদের অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা। পুলিশের যে পেশাগত শক্তি কাজ করে সেটি আর সক্রিয় নেই – এমন বাস্তবতায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটেছে।
গত বছর অগাস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঠেকাতে ওই মাসেই ১০ তারিখে ৫৮টি জেলায় সেনাবাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয় এবং সারা দেশে ২০৬টি ক্যাম্প স্থাপন করার কথা তখন আইএসপিআর জানিয়েছিলো।