শেষ !! হাসিনার রাজনীতির কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিল জাতিসংঘ
দেশের রাজনীতিতে আগেই অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেছেন। এবার তার রাজনীতির কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিল জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) তদন্ত প্রতিবেদন। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় হাসিনার সরকার ও তার দলের নৃশংসতার চিত্র তুলে ধরেছে জাতিসংঘ। যেখানে তারা বলেছে, জুলাই-আগস্টে অভ্যুত্থান চলাকালে ১৪ শতাধিক মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। ক্ষমতায় টিকে থাকতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ও আওয়ামী লীগ নৃশংসতা চালিয়েছে। আর এই হত্যাযজ্ঞে সমন্বয়ের ভূমিকায় ছিলেন খোদ শেখ হাসিনাই। জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদন নিয়ে খবর প্রচার করেছে বিবিসি, এএফপি, সিএনএন, রয়টার্স, আল জাজিরা, টাইমস অব ইন্ডিয়া থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক সব গণমাধ্যম। এ নিয়ে দেশ ছাড়িয়ে গোটা বৈশ্বিক রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় চলছে। বিদেশি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে ‘হাসিনার সরকার মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটিয়েছে’- এমন তথ্য বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। এমনকি শিশুসহ নিরীহ নাগরিকদের হত্যায় জড়িত অপরাধীরা যেন দায়মুক্তি না পায়, সে বিষয়টিতে জাতিসংঘ জোর দেওয়ায় খোদ আওয়ামী লীগেই নানা ধরনের হিসাব-নিকাশ তৈরি হয়েছে।রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘ দিনের লুটপাট, গুম-খুন, বিশেষ করে জুলাই-আগস্টে গণহত্যার মধ্যে দিয়ে শেখ হাসিনাই তার নিজের ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির কবর রচনা করেছিলেন। গদি টেকাতে শেষ পর্যন্ত নৃশংসতার চূড়ান্ত রূপ দেখিয়েছিলেন তিনি। যদিও জনরোষে দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। এবার হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিল জাতিসংঘ। জাতিসংঘের এই প্রতিবেদন শেখ হাসিনার ‘রাজনীতির কফিনে শেষ পেরেক’ ঠুকে দিয়েছে।জাতিসংঘের প্রতিবেদন প্রকাশের সময়টায় দেশি-বিদেশি সাংবাদিক এবং বহু বছর বন্দি ছিলেন এমন কয়েকজন ভুক্তভোগীকে নিয়ে হাসিনা সরকারের গোপন টর্চার সেল কুখ্যাত ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় তারা হাসিনার বন্দিশালার ভয়াবহ স্মৃতিচিহ্ন প্রত্যক্ষ করেন। বন্দিরা স্মৃতিচারণ করেন তাদের লোমহর্ষক সেসব দিন। জাতিসংঘের প্রতিবেদন প্রকাশের দিন আয়নাঘরের আলামত সামনে আসায় কোণঠাসা হয়ে পড়েছে হাসিনার আওয়ামী লীগও। বিভিন্ন সংস্থা ও দপ্তরে ‘সুযোগের অপেক্ষায়’ ঘাপটি মেরে থাকা তার দোসররাও পড়েছে চাপের মুখে। বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতিসংঘের প্রতিবেদন, গোপন বন্দিশালার চিত্র দেশের জনগণের মনে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিষয়ে যেমন নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে, তেমনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তারা পড়েছেন ইমেজ সংকটে, যার পরিণতিতে তাদের সমর্থনও কমবে মারাত্মকভাবে। তাছাড়া আগে থেকেই জুলাই-আগস্ট গণহত্যায় জড়িতদের বিচার এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের পক্ষে জোরালো দাবি উঠেছে। ফলে, এটা অনুমেয় যে আগামী দিনগুলোয় শেখ হাসিনার রাজনীতিতে ফেরা প্রায় পুরোপুরি অসম্ভব। নৃশংসতায় অভিযুক্ত ফ্যাসিস্ট দল আওয়ামী লীগেরও রাজনীতিতে ফেরা অত্যন্ত কঠিন হবে।