মৃত ব্যক্তির ভোট দিতে পারা নিয়ে যা বললেন বিএনপি
বিএনপি মৃত ব্যক্তির ভোটে ক্ষমতায় যেতে চায় না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) অবিলম্বে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে আয়োজিত এক প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী চালক দল।
অবস্থান কর্মসূচিতে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, জাতীয়তাবাদী শক্তি মৃত ব্যক্তির ভোটে ক্ষমতায় যেতে চায় না। জাতীয়তাবাদী দল এমন ভোটে নির্বাচনে জিততে চায়, যেই ভোট সাহাবুদ্দিনের মতো রশি টানিয়ে একজন হাফপ্যান্ট পরা আনসার পুলিশকে দিয়ে নির্বাচন করিয়ে বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করেছিলেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে। তাই তারেক রহমান বলেছেন, যারা গত ১৬ বছর হাসিনার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে আন্দোলনে ছিলেন, তাদের নিয়ে তিনি নির্বাচন করবেন।
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে তিনি বলেন, অন্ধকার দিয়ে অন্ধকার ঢাকা যায় না। আলোর দরকার হয়। সেই আলো আপনার (ড. ইউনূস) কাছে আশা করি আমরা। দয়া করে আপনার সহকর্মীরা যাতে না বলেন, ৫৪ বছরে রাজনৈতিক দল সংস্কার করতে পারেনি, এমন কথা আপনার স্টাফরা যাতে না বলে, নির্বাচন ২০২৬ এর মাঝামাঝি হতে পারে। এমন বেফাঁস কথা বলে দেশের মানুষকে আর আতঙ্কিত করার কোনো প্রয়োজন নেই। সংস্কার কম সময়ের মধ্যে করে নির্বাচনের ম্যাপ দিন, তারিখ দিন। তাড়াতাড়ি করুন, না হলে অস্থিরতা আবার বেড়ে যাবে। আবার কোনো ষড়যন্ত্র ফাঁক দিয়ে ঢুকে যাবে। সেই ষড়যন্ত্র রুখতে আবার সময় অতিবাহিত করবেন। আমরা সেটা আর গ্রহণ করতে চাই না।
তিনি আরও বলেন, তারেক রহমান বলেছেন, নির্যাতন সহ্য করেছে আমার দলের কর্মী, হাঁটুপানিতে দাঁড়িয়ে পুলিশের ভয়ে তারা রাত কাটিয়েছেন। যারা জঙ্গলে, কবরস্থানে ঘুমিয়ে হাসিনার পুলিশের অত্যাচার থেকে রক্ষা পেয়েছে, তাদের অনেক ক্ষোভ ছিল। শেখ হাসিনা বলেছিল, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে, তাদের একটি কর্মীও থাকবে না। হাসিনা, নরেন্দ্র মোদির আশ্রয়স্থলে থেকে তুমি একবার চোখ বুলিয়ে দেখো, তারেক রহমান ৫ আগস্টের পর তোমার একটি কর্মীর গায়েও হাত দেয়নি। এটাই ব্যক্তিত্ব, এটাই তার গ্রহণযোগ্যতা। এই গ্রহণযোগ্যতাকে ঠেকাতে আরেকটি ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। এ ষড়যন্ত্র রুখতে হবে।
‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ প্রসঙ্গে জয়নুল আরও বলেন, সরকার গত তিন দিন আগে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ শুরু করেছে। পুলিশের ভাষ্য তিন দিনে এক হাজারের ওপর গ্রেপ্তার করেছেন। জাহাঙ্গীর সাহেবের সততা নিয়ে কেউ প্রশ্ন করলে আমি সেটা প্রতিবাদ করবো। কিন্তু আমি জনগণের পক্ষ থেকে আপনাকে জানাতে চাই, জানতে চাই আপনার কাছে এই ডেভিল হান্ট কেন সময় মতো করা হলো না? আমি সত্য কথা বলতে চাই সচিবালয়ে আগুন হতো না, গাজীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ওপর আক্রমণ হতো না, যদি আপনারা সতর্ক দৃষ্টিতে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই শুরু করতেন।
নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করার কথা উল্লেখ করে বিএনপির চেয়ারপারসনের এই উপদেষ্টা বলেন, অসংখ্য আহত নেতাকর্মী যাদের চোখ নাই, হাত নাই, পা নাই; তাদের মা চোখের পানি ফেলছে, চিকিৎসা নিতে পারছে না, তাদের দাবি আপনি আর দীর্ঘায়িত করবেন না; অনুগ্রহ করে নির্বাচনের তারিখ দিন। কারণ আপনি বিলম্বিত হলে আপনার যে গ্রহণযোগ্যতা, আপনার যে ইতিহাস সেটা কলঙ্কিত করবে আওয়ামী লীগের ডেভিল হান্টের সদস্যরা।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন কবিরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. জুয়েল খন্দকারের সঞ্চালনায় এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমতুল্লাহ প্রমুখ।